ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার বদলা নিতে ভারতে আসছে আইএস!

babri-mosque_1ঢাকা: ভারতে আগমনের বার্তা দিয়ে শুক্রবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আরবি ভাষায় ২২ মিনিটের ওই ভিডিও বার্তায় তারা জানিয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ এবং কাশ্মীর, গুজরাট ও মুজাফফরনগরে মুসলিমদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে ভারতে আসছে তারা।

২০১৪ সালে ভারত থেকে পালিয়ে গিয়ে আইএসে যোগ দেয়া পাঁচ ভারতীয়কে দেখা যায়। এর মধ্যে প্রকৌশল বিদ্যার ছাত্র ফাহাদ তানভির শেখ তার আরো তিন সহযোগী নিয়ে ২০১৪ সালে সিরিয়ায় চলে যান। এই প্রথমবারের মতো তাদের প্রকাশ্য ভিডিওতে নিয়ে এলো আইএস। ভিডিও বার্তায় ফাহাদ নিজেকে আবু আমর-আল হিন্দী নামে পরিচয় দেন। ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়াকে উদ্দেশ্য করে ভিডিও বার্তাটি প্রচার করা হয়।

ভিডিওতে শপথ করে ফাহাদ বলেন, ‘আমরা ফিরে আসবো। তবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ এবং কাশ্মীর, গুজরাট ও মুজাফফরনগরে মুসলিমদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে তলোয়ার হাতে নিয়ে ফিরে আসবো।’ গত বছর ইরাকের রাক্কায় বোমা হামলায় মারা যাওয়া তাদের আরেক সহযোগী শাহিম তাঙ্কির প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি।

ফাহাদ তানভির শেখ

ভিডিও বার্তায় আগে পূর্ব-পরিচিত কিছু আইএস সদস্যকেও দেখা যায়। আগে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন সংগঠনে কাজ করতেন তারা। ওই বার্তায় অপরিচিত এক জিহাদি বলেন, ‘যেসব ভারতীয়রা আমাদের উদ্দেশ্য বুঝতে চান তাদের বলছি, আপনাদের তিনটি পথ খোলা আছে: হয় ইসলাম গ্রহণ করুন, না হয় জিজিয়া দিন অথবা মরার জন্য প্রস্তুত থাকুন।’

ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ‘জিজিয়া’ এক ধরনের কর, যা নিরাপত্তা পাওয়ার বিনিময়ে ইসলামি রাষ্ট্রে বসবাসরত অমুসলিমরা তাদের সরকারকে প্রদান করে।

মুসলিম সেনাপতি মুহাম্মদ বিন কাসিম ভারতীয় অঞ্চল বিজয়ের মধ্য দিয়ে এই এলাকায় ইসলামিক শাসনের সূত্রপাত করেন বলে ভিডিওর শুরুতে উল্লেখ করা হয়। ভিডিওতে যেসব জিহাদিকে দেখানো হয় তারা নিজেদের ‘হিন্দ ওয়াল সিন্ধ’র জিহাদি বলে উল্লেখ করেন। ‘হিন্দ ওয়াল সিন্ধ’ কথাটি পাকিস্তান এবং ভারতীয় অঞ্চলকে বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।

ভারতীয় হিন্দুদের ‘গরু পূজারী’ হিসেবে উল্লেখ করে আইএসের ওই বার্তায় বলা হয়, ব্রিটিশরা পরবর্তীতে ভারতীয় উপমহাদেশের শাসন হিন্দুদের হাতে অর্পণ করে। পরে মুম্বাই, গুজরাট, আসাম এবং মোরাদাবাদের মুসলিমদের ওপর সহিংসতা চালায়। ভিডিওর শেষের দিকে ভারতের মুসলিমদের মুহাম্মদ বিন কাসিমের উত্তরসূরি হিসেবে উল্লেখ করে জিহাদে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদটি ১৫২৭ সালে ভারতের প্রথম মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে নির্মিত হয় এবং তার নামেই এর নামকরণ করা হয়। ১৯৯২ সালের এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মসজিদটি ধ্বংস করা হয়। ওই দাঙ্গায় দুই হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।

ওই ঘটনার মামলায় ২০১০ সালে দেয়া এক রায়ে ভারতের হাইকোর্ট জানায়, মসজিদের ভূমি সমান তিনভাগে ভাগ করে একভাগ রাম মন্দির নির্মাণের জন্য, দ্বিতীয়ভাগ ইসলামিক সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেয়ার জন্য এবং তৃতীয়ভাগ পাবে নির্মোহী আখরা নামে একটি হিন্দু সংগঠনকে দেয়ার জন্য রায় দেয়।

বাবরি মসজিদ (ধ্বংসের আগে)
  • বাংলামেইল

পাঠকের মতামত: